ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

কক্সবাজারে স্থায়ী লবণ বোর্ড গঠন, ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত ও ঋণ মওকুপের দাবী

ফরিদুল আলম দেওয়ান, মহেশখালী :  কক্সবাজারে স্থায়ী লবণ বোর্ড গঠন করে লবণের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণ, মিল মালিকের কারসাজিতে ওজনে জোচ্চুরি বন্ধ ও ১৯৯৬-৯৭ সালে সরকার কর্তৃক মাঠ পর্যায় থেকে ন্যায্য মূল্যে লবণ কেনার জন্য চাষীদের দেওয়া একর প্রতি ৫ হাজার টাকা ঋণ মওকুপসহ লবণ চাষীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবীতে মহেশখালীতে এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৯ জানুয়ারী মহেশখালী প্রেসক্লাবে মহেশখালী লবণ চাষী সংগ্রাম পরিষদ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে মহেশখালী লবণ চাষী সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ও মহেশখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ আনোয়ার পাশা চৌধুরী তার লিখিত বক্তব্যে লবণ চাষীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে বলেন, ১৯৯৬-৯৭ সালে মাঠ পর্যায়ে লবণের অস্বাভাবিক ভাবে দর পতনের ফলে চাষীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বানিজ্যমন্ত্রী মরহুম আব্দুল জলিল কক্সবাজারে পরিদর্শনে এসে লবণ চাষীদের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে সরজমিনে দেখেন। এরই প্রেক্ষিতে সরকারের নির্দেশে লবণের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায় থেকে সরকারি ভাবে মন প্রতি ১১০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে ন্যায্য মূল্যে লবণ ক্রয় করার নিমিত্তে ২০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেন। উক্ত ২০ কোটি টাকা থেকে প্রায় ১৭ কোটি টাকা লবণ চাষীদের মাঝে স্থানীয় সকল তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে একর প্রতি ৫ হাজার টাকা করে বিলি করেন। কথাছিল সরকার মাঠ পর্যায় থেকে লবণ কিনবে। কিন্তু পরবর্তীতে লবণের বাজার মূল্য স্বাভাবিক গতিতে ফিরে আসায় সরকার আর লবণ কিনেনি। ফলে লবণ চাষীদের মাঝে দেয়া একর প্রতি ৫ হাজার টাকা ব্যাংক কর্তৃক ঋণ হিসাবে তুলে দেয়। বর্তমানে কিছু কিছু লবণ চাষী বিভিন্ন দায়ে পড়ে কিছু কিছু চাষী ঋণের টাকা পরিশোধ করলেও হাজার হাজার লবণ চাষীর নামে ওই টাকা সুদে আসলে চক্রবৃদ্ধির হারে তুলে দিয়ে সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করেছে। ফলে হাজার হাজার লবণ চাষীদের ঘাঁড়ে এখন সার্টিফিকেট মামলা ঝুলছে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা প্রয়োজনে সরকারের দেয়া একর প্রতি ৫ হাজার টাকা মওকুপ করে সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান।

অপর দিকে মিল মালিক কতৃক সিন্ডিকেট করে লবণ পরিমাপে জোচ্চুরির অভিযোগ তুলে বলেন, সরকারি ভাবে সাড়ে ৩৭ কেজিতে একমণ হলেও মিল মালিকরা এখন তাদের ইচ্ছা মাফিক মণ প্রতি ওজনে ৪৭ কে:জি নিয়ে নিচ্ছে। ফলে মাঠ পর্যায়ে চাষিরা ওজনে হয়রানির শিকার হচ্ছে। বক্তারা ৪০ কে.জিতে মণ নিধারণ করে ওজনে কারচুপি বন্ধের দাবী জানান।

লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, লবণ চাষিরা যেন জারজ সন্তানের পর্যায়ে পড়ে গেছে। সরকার এ পর্যন্ত লবণকে শিল্প পণ্য বা কৃষি পণ্য কোনটিতেই স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে শিল্প মন্ত্রণালয়ে গেলে বলে এটি শিল্প নয়, আবার কৃষি মন্ত্রণালয়ে গেলে বলে এটি কৃষি পন্য নয়। তাই অবিলম্বে লবণকে কৃষি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ককস বাজারে স্থায়ী লবণ বোর্ড গঠন করে লবণ চাষিদের যাবতীয় সমস্যা সমাধানে ককস বাজারে নবনির্বাচিত চার সাংসদ,জেলাপ্রশাসক,ককসবাজারের জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি,সাধারণ সম্পাদক সহ প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্ধের দৃষ্টি আর্কষণ করেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদেরন মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বড়মহেশখালি ইউনিয়ন আঃ লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, সাবেক সভাপতি এম, ফোরকান, মোঃ কামাল কোং,দলিল মিয়া, লবণ ব্যাবসায়িদের মধ্যে মহসিন আনোয়ার,নেচার উদ্দিন,শাহাব উদ্দিন, এনামুল হক, জাফর আলম, সুকুমার কান্তি দে, সিরাজুল ইসলাম, মোঃ ইসলাম, সালমান,আব্দুল্লাহ আল নিশান, সিরাজুল ইসলাম, আশরাফ জামাল ও আব্দুল্লাহ আল নোমান সুমন প্রমুখ।

পাঠকের মতামত: